ফ্রিল্যান্সিং একধরনের ব্যবসা। একজন ফ্রিল্যান্সার একজন ছোট ব্যবসায়ী। ছোট বলার কারন ফ্রিল্যান্সার প্রচার বা মার্কেটিং এর জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করবেন না এটাই ধরে নেয়া হয়। অথচ ব্যবসার মুল কথাই হচ্ছে প্রচারে প্রসার।
বড় মানেই ভাল এমন কথা নেই। বাস্তবে বড় কোম্পানীর মোট লাভ থেকে খরচ বাদ দেয়ার পর যা থাকে সেটা হয়ত ততটা বড় না। ফ্রিল্যান্সার অল্প প্রচারে বেশি সুবিধে পেতে পারেন। ক্লায়েন্টকে কিছু সুবিধে দিয়ে সহজে তার মন জয় করতে পারেন।
এধরনের প্রধান কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।
. মধ্যস্থতাকারী বাদ দেয়া
ফ্রিল্যান্সার এর জন্য যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয়। সেইসাথে এটাও প্রচলিত সত্য, বাংলাদেশের মানুষ যোগাযোগে খুব দক্ষ না। অনেকেই সরাসরি যোগাযোগ না করে অন্য কাউকে ব্যবহার করতে বেশি আগ্রহী হন। সেকারনে একধরনের মধ্যস্থতাকারী শ্রেনী তৈরী হয়েছে যারা দুপক্ষের যোগাযোগ রক্ষা করে এবং সবচেয়ে বেশি আয় করে।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ভাল করার জন্য (অনলাইন হোক অথবা স্থানীয় কাজেই হোক) মধ্যস্থতাকারীকে বাদ দিতে চেষ্টা করুন। হিসেবটা অত্যন্ত সরল, মধ্যস্থতাকারী ৫০ হাজার টাকার কাজ নিয়ে আপনার কাছে করিয়ে আপনাকে দিল ২০ হাজার টাকা। আপনি সরাসরি ২০ হাজার টাকায় কাজটি নিলে ক্লায়েন্টের ৩০ হাজার টাকা বেচে যায়। তিনি আপনার ওপর সন্তুষ্ট থাকবেন এটাই স্বাভাবিক।
. ধারাবাহিকতা বজায় রাখা
বড় কোম্পানীতে কাজ করার সময় অনেককে ব্যবহার করে। কোন ক্লায়েন্টের কাজ যারা করেছে পরবর্তী কাজের সময় হয়ত সেই ব্যক্তিদের পাওয়া গেল না।
ফ্রিল্যান্সার এর সুবিধে হচ্ছে তিনি নিজেই পুরো বিষয়টি বোঝেন। কাজেই আগের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে খুব সহজে ধারনা পেতে পারেন ক্লায়েন্ট কি চান। আগের কাজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সহজে আগের ক্লায়েন্টের কাছে কাজ পেতে পারেন।
. ততপরতা
ফ্রিল্যান্সারকে অন্য কারো সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ফলে ক্লায়েন্ট সরাসরি জানিয়ে দিতে পারেন নির্দেশ পাওয়ার সাথেসাথেই কাজ শুরু হবে। এই কারনে ক্লায়েন্ট কাজের জন্য কোম্পানীর বদলে ফ্রিল্যান্সারের সাথে যোগাযোগ করতে পছন্দ করেন।
. খরচ কমানো
এককভাবে কাজ করার সুবিধে হচ্ছে অতিরিক্ত ব্যয় প্রয়োজন হয় না। অফিসের যায়গা থেকে শুরু করে অন্যান্য যাকিছু খরচ করতে হয় সেগুলি বাদ দিয়ে সেই সুবিধে ক্লায়েন্ট দেয়া সম্ভব হয়। ক্লায়েন্টকে বিষয়টি জানালে তিনিও আগ্রহি হন ফ্রিল্যান্সারের কাছে কাজ করাতে। ক্লায়েন্টকে জানাতে পারেন কিভাবে অফিসের ভাড়া থেকে শুরু করে সমস্ত খরচ তার ওপর চাপানো হয়।
. ব্যক্তিগত সম্পর্ক
ফ্রিল্যান্সার যখন একজন ব্যক্তি, ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করার সময় একধরনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কাজের বিষয় নিয়ে আলোচনা করে একসময় ফ্রিল্যান্সার পরামর্শদাতার ভুমিকা পালন করেন। ইচ্ছে করলে সেটা আরো বাড়ানো যায়। সরাসরি কাজের বাইরে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের বিষয় নিয়ে যদি আলোচনার সুযোগ থাকে তাহলে সেই সম্পর্ক আরো গভীর হয়। যেমন পছন্দের গান, বই, ছবি ইত্যাদি।
ক্লায়েন্টের সাথে সম্পর্ক যত স্বাভাবিক কাজ করা তত সহজ। তবে এটাই মনে রাখা জরুরী, ব্যবসা এবং বন্ধুত্ব এক বিষয় না। ব্যক্তিগত সম্পর্ক এমন পর্যায়ে যাওয়া উচিত না যা ব্যবসার জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। একাধিক পোষ্টে আগেই উল্লেখ করা হয়েছে বিনা টাকায় কাজ না করার বিষয়, কিংবা বাকি না রাখার বিষয়।
একথা ঠিক যে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে একজন ব্যক্তির পক্ষে কোন কোম্পানীর সাথে প্রতিযোগিতা করা কঠিন। কোম্পানী অর্থবল-জনবল ব্যবহার করে সুবিধে পেতে পারে। ফল হিসেবে ফ্রিল্যান্সারকে অনেক সময়ই ব্যর্থতা স্বিকার করতে হয়।
সেকারনেই ফ্রিল্যান্সারের প্রয়োজন ধৈর্য্য। মাসের পর মাস চেষ্টা করে একসময় নিজের পরিচিতি তৈরী করা।
0 comments:
Post a Comment